ইসরাইলি দখল ও বসতি স্থাপনের নিন্দা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফিলিস্তিন ও আরব ভূখণ্ডে অবৈধ ইসরাইলি দখল ও বসতি স্থাপনের নিন্দা জানিয়েছেন এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিন ও আরব ভূখণ্ডে অবৈধভাবে দখল ও বসতি স্থাপনের নিন্দা জানায়। আমরা ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই।’
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি হামিদ স্বাধীনতার লড়াইয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও তাঁর দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এক দীর্ঘকালীন ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সাবেক ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট ও প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাতের মধ্যকার ওই ঐতিহাসিক চমৎকার সম্পর্ককে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সর্বদা একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠায় ফিলিস্তিনি দাবির প্রতি তাঁর সমর্থন জানাতেন।
ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে ইয়াসির আরাফাতের আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ আরবি ভাষায় অনুবাদ করার জন্য ফিলিস্তিন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বিরাজমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারণ হবে বলে আবদুল হামিদ আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ উচ্চতর শিক্ষার জন্য ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সুযোগ অব্যাহত রাখবে।
বৈঠককালে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনের অনুভূতি ও দাবির প্রতি আন্তরিক সহযোগিতা ও সমর্থন দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখল ও বসতি স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের অবস্থানের প্রশংসা করেন।
ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো জোরদার হবে বলে মাহমুদ আব্বাস আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে প্রেসিডেন্ট আব্বাস বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
বৈঠককালে অন্যান্যের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক এবং বঙ্গভবন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সফররত ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের সম্মানে নৈশভোজ শেষে দরবার হলে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
নৈশভোজে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ, বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত, ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রিয়াদ এন এ মালিকি ও ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি মাহমুদ এস এ আলহাব্বাস অংশ নেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ